মেট্রোরেলের যুগে বাংলাদেশ- প্রতিদিনের সকাল এডভারটাইজ
ঢাকাFriday , 14 February 2025
  • Canvas Properties Ads- Pratidiner Sokal
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ইতালিপ্রবাসী স্বামীকে ডিভোর্স না দিয়ে পরকিয়ায় জড়িয়ে বিয়ে ও বিপুল অর্থ আত্মসাৎ প্রতারনার অভিযোগ

Link Copied!

প্রবাসী স্বামীর পাঠানো গত ১৪ বছরে ১ কোটি ৭ লাখ টাকা ও স্বর্ণের গহনা তৈরির জন্য ১৫ লাখ মোট এক কোটি ২২ লাখ টাকা নিয়ে উধাও স্ত্রী নিশু আক্তার। ঘটনাটি ঘটেছে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ঘড়িসার ইউনিয়নের নন্দনসার গ্রামে।
তালাকপ্রাপ্ত রফিক ছৈয়ালের বাবা হাসেম ছৈয়াল বাদী হয়ে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ, প্রতারণা ও ভয়ভীতির অভিযোগ এনে নিশু আক্তার (১৩৭ নং ভিতর কুশিয়া, ভিটার কুশিয়া, ঘড়িসার, নড়িয়া)  ও তার মা-বাবা এবং ভাইসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে মামলা (সিআর ৪১৫/২০২৩) দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বাদীর কৌসুলি অ্যাডভোকেট নুরুল হক হাওলাদার।
ইতালি প্রবাসী রফিক ছৈয়াল, সংসার জীবন প্রায় ১৪ বছর ছুই ছুই। রফিক অল্প সময়ের জন্য দেশে এসে ফের কর্মস্থলে চলে যায়। প্রতি মাসে অথবা বিভিন্ন সময়ে স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ীর লোকদের ব্যাংক হিসাব নম্বরে পাঠিয়েছেন কোটি টাকার। সম্প্রতি দেশে ফিরে দেখেন স্ত্রী লাপাত্তা এবং ব্যাংক হিসাবটি ফাঁকা। এ ঘটনার পর স্ত্রীর নামে নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রায় কোটি টাকা প্রতারণার মামলা করেন রফিক।
রফিক ছৈয়াল গত ২০০৯ সালে ৪ঠা জুন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে পরবর্তীতে জীবিকার তাগিদে জীবনযুদ্ধে ঝাপিয়ে পরতে পাড়ি দেয় ইতালি’তে। বিয়ের সময় স্ত্রী নিশু আক্তারের বয়স ছিলো ১৪ বছর পরবর্তীতে স্ত্রীকে ফুলে ফেপে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে এখন অতীতকে ভুলে গিয়ে ইতি টেনেছে সুখের সংসারে। প্রবাদ আছে- “দুধ কলা দিয়ে কালসাপ পোষা”।

ভুক্তভোগী রফিক বলেন, ২০১১ সালে শ্বশুর বাড়ির সকলের অনুরোধে স্ত্রী নিশু আক্তারের ভাই (মামলার ৪নং আসামী) হিরু মুন্সীকে ৮ লাখ টাকা নিজ অর্থ বহন করে ইতালি নিয়ে যাই, বিদেশ যাওয়ার ৮ লাখ এখনো ফেরত দেয়নি স্ত্রী নিশুর পরিবার। শুধু তাই নয়, জমি কেনা বাড়ি করার আশ্বাস দিয়েও হাতিয়ে নিয়েছে অর্ধ কোটি টাকারও বেশি। সংসার জীবনের ১৪ বছরে স্ত্রী নিশু আক্তার (২৮) ও শ্বাশুড়ী হোসনে আরা বেগম (৫৪) একাউন্টে ঘড়িসার শাখা ন্যাশনাল ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, ফাস্টসিকিউরিটি ব্যাংক, এটিএম বুথ নড়িয়া শাখার মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে সর্বমোট ৬৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা প্রেরন করেছি,  সারা জীবনের কষ্টের অর্জিত অর্থ প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্ব হারিয়েছি।
মামলা সূত্রে জানা গেছে – রফিক ছৈয়ালের স্ত্রী নিশু আক্তার (১ নং আসামী) এর পিতা আবুল কালাম মুন্সী (৩ নং আসামী) এবং মনির বেপারীর (৫ নং আসামী) সহযোগিতায় নিশু আক্তার ও তার মা ‘হোসনে আরা বেগম’ (২ নং আসামী) ব্যাংকে গচ্ছিত প্রায় ৬৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা স্বামীর অজান্তেই অর্থ উত্তোলন করে। স্ত্রী নিশু আক্তারকে স্বর্ণের গহনা কেনার জন্য হিরু মুন্সীকে প্রায় ১৫ লাখ টাকা ইতালি প্রবাসী রফিক, যা দ্বারা স্ত্রী নিশু ২৫ ভরি বিভিন্ন ধরনের স্বর্ণালংকার তৈরী করে। বিয়ের পর ভরনপোষণ, লেখাপড়া খরচসহ নিশুর মা-বাবা, ভাই মিলে বিভিন্ন জায়গায় সম্পদের আশ্বাস দিয়ে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ইতালি প্রবাসী রফিকের থেকে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
রফিকের বাবা হাসেম ছৈয়াল বাদী হয়ে মামলায় উল্লেখ করে, পুত্রবধূ নিশু আক্তারের (১ নং আসামী) সাথে মনির বেপারী (৫ নং আসামী) গোপনে পরকিয়া প্রেমে আসক্ত হয়ে মনিরের প্ররোচনায় নিশুর পরিবার এই ধাপে ধাপে বিপুল পরিমান অর্থ আত্মসাৎ করার সুযোগ পায়। সর্বশেষ গত ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ইং রফিকের বাবা পুত্রবধূ নিশুর বাড়িতে গেলে জানতে পারে, নিশু আক্তার গত ২৪ এপ্রিল, ২০২৩ ইং তারিখে একতরফা তালাক প্রদান করে মনির বেপারীকে (৫ নং আসামী) বিয়ে করেছে, মনির বেপারীর বাড়ি গোলারমাঠ। যা রফিকের পরিবার অবগত ছিল না। মূলত বিয়ের পর রফিক ইতালি পাড়ি জমালে ১৪ বছর সংসার জীবনে নিশু আক্তার ও তার মা হোসনে আরা বেগমসহ বিভিন্ন কৌশলে টাকা লেনদেনের বিষয়ে রফিক ব্যতীত অন্য কেউ জানতো না, এই সুযোগকে ব্যবহার করে হাসেম লাকুরিয়ার সাত মেয়ে (হোসনে আরা বেগম, বিউটি আক্তার, লাইজু আক্তার, শান্তা আক্তার, মুন্নি আক্তার, লাইতুন আক্তার) খালাদের প্ররোচনায় নিশুকে মনির বেপারীর সাথে পরকিয়া সম্পর্কে জড়ানোর সাহারা দিয়ে প্রবাসী স্বামী রফিকের বিপূল অর্থ লাপাত্তা করার ইন্ধন জোগায়।
ঘটনাটি স্থানীয় শালিস বৈঠকের মাধ্যমে সমাধান করতে চাইলে নিশুর পরিবার অভিযোগ অস্বীকার করে।
বিপুল অর্থ আত্মসাৎ, প্রতারণা ও ভয়ভীতির অভিযোগ এনে নিশু আক্তার, তার মা-বাবা, ভাই ও মনির বেপারীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করলে বর্ণিত বিবাদীগন দীর্ঘদিন যাবত উক্ত মামলা প্রত্যাহার করার জন্য রফিক ছৈয়ালের বাবা হাসেম ছৈয়ালসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বিভিন্ন সময় গুম, হত্যা প্রাননাশের হুমকি দিলে গত ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং তারিখে সংশ্লিষ্ট নড়িয়া থানায় হাসেম ছৈয়াল সাধারন ডায়েরী (জিডি) করে।
সর্বস্ব হারা রেমিট্যান্স যোদ্ধা রফিক ও তার পরিবারের দাবি ‘প্রশাসনের নিকট প্রতারক নিশু আক্তার ও অন্যান্য আসামীদের আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে’।
এ বিষয়ে ১ নং আসামী নিশু আক্তারকে তার ব্যক্তিগত মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
নিশুর বিরুদ্ধে বিপূল অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য নিয়ে ধারাবাহিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে।

গ্রামীনফোন বাংলাদেশে এই প্রথম লিমিটলেস ইন্টারনেট